একটি অলস দিন........

ছোটবেলা থেকেই মেহেদী পড়ার এক প্রকার ফ্যাসিনেশন কাজ করতো আমার ভেতর। যখন-ই দেখতাম কেউ মেহেদী পড়েছে, মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম আর ভাবতাম কীভাবে এতো সুন্দর কারুকার্য করে। আগে আমাদের দেশে কোন ফ্যাস্টিভেল ছাড়া মানুষ খুব কম মেহেদী পড়তো কিন্তু এখন মানুষ অনেক বেশী সৌখিন। নিজেকে সাজানোর জন্য এখন আর কোন উপলক্ষের দরকার হয় না কিংবা কোন অজুহাত -ও লাগে না। বলা যায় এখনের নতুন ট্রেন্ড হলো কে কতো বেশী এস্থেটিক ডিজাইনের মেহেদী পড়তে পারে।

আম্মু-র থেকে শুনেছি তারা আগে কখনোই রেডিমেড কোণ ব্যবহার করতো না হাতে। সবসময় গাছের ফ্রেশ মেহেদী ব্যবহার করতো। তখন আম্মুকে জিজ্ঞেস করতাম গাছের মেহেদী দিয়ে কি এতো ভালো ডিজাইন করা যায়? মা বলতো তারা ফ্রেশ মেহেদী তুলে শিল নোড়া-য় বেটে তারপর মেহেদী পেস্ট ছেকে কোণ তৈরী করতো।

এখন কিন্তু আবার সেই ট্রেন্ড ফিরে এসেছে। বর্তমানে অনেকেই দোকানের কেনা মেহেদী কোণ ইউজ না করে হোমমেইড মেহেদী ইউজ করে। আর এই মেহেদী গুলো বিভিন্ন সেলার অনলাইনে সেল করে এবং ক্লেইম করে এগুলো তাদের নিজেদের বানানো। আর প্রাইজের কথা বললে ইন্ডিয়ান যেকোন মেহেদীর থেকে তিন থেকে চার গুণ বেশী প্রাইজে তারা সেল করছে। অবশ্য সত্যি কথা বলতে মেহেদীর মান ও যথেষ্ট ভালো।

CYMERA_20210704_172637.jpg

চলমান লকডাউনের পঞ্চম দিন আজ। সারাদিন বাসায় সুয়ে বসে ঘুমিয়ে ক্লান্ত হয়ে হঠাৎ চোখ পড়ে ভ্যানিটি র উপর থাকা মেহেদী কোণের উপর। তারপর আর নিজেকে আটকে রাখতে না পেরে মেহেদী পড়া শুরু করলাম। এটা কিন্তু একটা ভালো টাইম পাস ট্রাস্ট মী। যদি এখনো ট্রাই না করে থাকেন তাহলে করে দেখতে পারেন। কথায় বলে না

নেই কাজ তো খৈ ভাজ।।

ব্যাপারটা অনেকটা সেরকমের হলেও ভালোই সময় কাটে। আমার খুব বেশী হিজিবিজি ভারী ডিজাইন পছন্দ না। ক্লাসি আর সিম্পল ডিজাইন গুলোই ভালো লাগে। সেরকম-ই একটা সিম্পল ডিজাইন করেছি....

CYMERA_20210704_182518.jpg

ছোটবেলায় সবসময় রাতে মেহেদী পড়িয়ে দিতো আম্মু। এতে নাকি কালার ভালো আসে। বড় হওয়ার পর অবশ্য বুঝেছি সেসব কিছু না, আসলে রাতে মেহেদী দিয়ে ঘুমালে অপেক্ষাকৃত অনেকক্ষণ হাতে পানি লাগানো হয় না। এতে করে রঙ টা অনেক গাঢ় ও স্থায়ী হয়। আমার এখনো মনে আছে ছোটবেলায় মেহেদী দিয়ে ঘুমিয়ে সকালে উঠে দেখতাম মুখে, নাকে এমনকি বিছানার চাদর বালিশের কভার সবকিছুতে কেমন লেপ্টে আছে মেহেদী। আম্মুর থেকে বেশ বকুনি খাওয়া হতো সেজন্য। এখনকার মেহেদী আর্টিস্ট রাও রাতে মেহেদী পড়তে বলে এবং কিছু হোম রেমেডি ও করতে বলে। যেমন মেহেদী শুকিয়ে গেলে এর উপর সুগার পাউডার অথবা চিনি এবং একটু লেবুর রস উপরে ব্রাশ করে দিতে। এতে নাকি মেহেদীর রঙ আরো গাঢ় হয়। আমি অবশ্য কখনো ট্রাই করিনি। আমার মনে হয় মেহেদীর কালচে রঙের থেকে ন্যাচারাল যে কালার টা আসে সেটা অনেক ভালো। এটা অবশ্য যার যার চয়েজ।।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
2 Comments
Ecency